Description
বইয়ের কথা:
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্পের বহু-বিচিত্র বিষয়। সেসব বিষয় যেমন অভিনবত্বে চমৎকার, তেমনই কাহিনির টানাপেড়েনে পাঠকের কাছে সমান মনোগ্রাহী। ‘বিধুদারোগা’ গল্প দিয়ে তাঁর কিশোরদের ছোটো গল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তারপর নানা বিষয় নিয়ে তিনি অজস্র গল্প লিখেছেন। এর মধ্যে চোর-ডাকাত নিয়ে লেখা তাঁর গল্পের সংখা কম নয়। যে গল্পগুলোর কথা পাঠক কখনও ভুলতে পারে না।
যেমন ‘বড়ো চোর ছোটো চোর’ গল্পের চোর নবু দাসের হাত তত পাকেনি। শেষে নন্দরামের শোয়ার ঘরে ঢুকে তৃতীয়বারের জন্যে যাতে নবুর হাত ফসকে না যায়, চেষ্টার কসুর করল না। নন্দরামের খাট থেকে নামার আগেই ছুড়ে দেওয়া এক বান্ডিল নোট নিয়ে হাওয়া হয়ে গেল নবু চোর।
গয়ারাম মাসির বাড়ি যাচ্ছে মাসতুত দাদার বিয়েতে। পথে দেখা পচা আর গদার সঙ্গে। তারাও যাচ্ছে গয়ারামের মাসির বাড়িতে গয়নাগাটি চুরি করতে। অন্ধকারে গয়ারামের মনে হল, শুধু এই দু’জন নয়, আরও অনেক লোকই ওদিকেই যাচ্ছে অন্ধকারে। এত চোর আসছে দেখে মেসো গুণময় রায় নিয়ম করে দিলেন, চোরদের লাইন করে বাড়িতে ঢুকতে হবে। অমন সময় মাসি এসে গয়ারামকে দেখে ঠিক চিনতে পারলেন। পচা আর গদা গয়ারামের কাণ্ড দেখে অবাক! ‘মাসির বাড়ি’র গল্পের গয়ারামের আর চুরি করাই হল না।
‘রাত যখন বারোটা’, ‘চোরে-ডাকাতে’, ‘পটলবাবুর বিপদ’, ‘পুরনো জিনিস’- এরকম চোর-ডাকাতদের নিয়ে পাঠকের মন-জয় করা আঠারোটি কী সব মজাদার আর দুর্দান্ত গল্প লিখেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সে না পড়লে বোঝানো কঠিন।
লেখক পরিচিতি:
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের বিক্রমপুরে। বাবার রেলের চাকরির সুবাদে শৈশবে তাঁর ছিল নানা জায়গায় বসবাসের এক যাযাবর জীবন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে শুরু হয় তাঁর এপার বাংলার জীবন। অসম, বিহার, উত্তরবঙ্গে কেটেছে শৈশবের দিনগুলো। প্রথমে জলপাইগুড়ির ফণীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউশনে ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশুনো করেন। এর পর কুচবিহারের মিশনারি স্কুলের বোর্ডিং জীবন। তারপর ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই. এ. পাশ করেন। কলকাতার কলেজ থেকে বি. এ. এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাসাহিত্যে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।
স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। তারপর সাংবাদিকতা আনন্দবাজার পত্রিকায়। তাঁর প্রথম গল্প ‘জলতরঙ্গ’ প্রকাশিত হয় ‘দেশ’ পত্রিকায়। প্রথম উপন্যাস ‘ঘুণপোকা’ ‘দেশ’ পত্রিকার শারদীয় সংখ্যায় প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে। প্রথম কিশোর উপন্যাস ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’। অজস্র কিশোর গল্পের স্রষ্টা। ১৯৭৩ এবং ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে দু’বার আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে কিশোর সাহিত্যের জন্যে পান ‘বিদ্যাসাগর পুরস্কার’। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে সাহিতা আকাদেমি পুরস্কার’ ‘মানবজমিন’ উপন্যাসের জন্যে। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে ‘বঙ্গবিভূষণ’ এবং ২০২১ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্য আকাদেমির ফেলো নির্বাচিত হন।
Reviews
There are no reviews yet.